২৯শে জানুয়ারি চীন থেকে ফেরেন ওই শিক্ষার্থী। রোগির বাবা আলতাফ হোসেন জানিয়েছেন, তার ছেলে রংপুর সরকারি পলিটেকনিক্যাল কলেজ থেকে সিভিলে ডিপ্লোমা পাসের পর বিএসসি ইঞ্জিনিয়ারিং পড়ার জন্য চীনের আনহুই প্রদেশের আনহুই ইউনিভার্সিটি অ্যান্ড টেকনোলজিতে সিভিলে ভর্তি হয় আড়াই বছর আগে। চীন থেকে ফেরার আটদিন পর তার শ্বাসকষ্ট শুরু হয়। শ্বাসকষ্ট শুরুর তিনদিন পরে তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
তিনি আরো বলেন আমার ছেলে তার দুই সহপাঠী কুমিল্লা ও চট্টিগ্রামের দুজনসহ ২৯ জানুয়ারি ঢাকায় শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে এসে রাত ১২টায় নামে।তখন চট্টগ্রামের ছেলেটির জ্বর হওয়ায় সেখান থেকে তাকে কুর্মিটোলা হাসাপাতালে নেয়া হয়। তিন দিন পর তাকে সেখানে থেকে ছেড়ে দেয়া হয়। আমার ছেলে অপর বন্ধুসহ রাতে হোটেলে থেকে ৩০ জানুয়ারি নীলসাগর ট্রেনযোগে বাড়িতে আসেন ।
রংপুর মেডিকেল কলেজের বর্তমান অবস্থান
হাসপাতালটির চিকিৎসকদের দেখা গেছে, জীবানু প্রতিরোধী বিশেষ পোশাক, মুখোশ, চশমা আর দস্তানা পরে কাজ করছেন।
চিকিৎসকেরা বলছেন, ঐ শিক্ষার্থীর পরীক্ষা-নিরীক্ষা ও চিকিৎসায় সর্বোচ্চ সাবধানতা অবলম্বন করা হচ্ছে।স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের নির্দেশে সম্প্রতি রংপুর মেডিকেল কলেজে করোনা ইউনিট খোলা হয় । আইইডিসিআর শনিবারেই রংপুরে প্রতিনিধি পাঠিয়ে ছাত্রটির রক্ত, লালা আর ঘামের নমুনা পরীক্ষার জন্য সংগ্রহ করে ঢাকায় আনিয়েছে।
“যদিও সাবধানতা হিসেবে সব ধরণের ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে, কিন্তু তার শরীরে আমরা এখনো পর্যন্ত করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হবার কোন লক্ষণ পাইনি। এরমধ্যে আইইডিসিআর গতকাল (শনিবার) ঢাকা থেকে এসে তার রক্ত, লালা আর ঘামের নমুনা নিয়ে গেছে।”
“তারা আগামী দুইদিনের মধ্যে মানে মঙ্গলবারের মধ্যে রিপোর্ট দেবে, সে অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়া হবে। তবে এখনো উদ্বেগের কিছু দেখছি না আমরা।”
শ্বাসকষ্ট ও বুকব্যথা নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হওয়া এই শিক্ষার্থীকে হাসপাতালের নবগঠিত করোনা ইউনিটের আইসোলেশন ওয়ার্ডে নিয়ে রাখা হয়েছে। রোববার সকালে ছাত্রটির চিকিৎসায় মেডিকেল কলেজ কর্তৃপক্ষ ১২ সদস্যের বোর্ড গঠন করেছে বলে কর্মকর্তারা জানাচ্ছেন।
রংপুর মেডিকেল কলেজ (রমেক) হাসপাতালের অধ্যক্ষ ডা. নুরুন্নবী লাইজু জানান, আবিদ হোসেন নামে চীনফেরত এক ব্যক্তি জ্বর ও শ্বাসকষ্ট নিয়ে হাসপাতালে এলে তাকে আইসুলেশন বিভাগে ভর্তি করা হয়েছে।
রেফারেন্সঃ
চীনফেরত রংপুরের ছাত্রের শরীরে মেলেনি করোনাভাইরাস – যুগান্তর
রংপুর মেডিকেল কলেজে ভর্তি হওয়া এক চীনফেরত ছাত্রকে নিয়ে তোলপাড় – বিবিসি বাংলা
করোনাভাইরাস কি ?
করোনাভাইরাস কি?
করোনাভাইরাস শ্বাস-প্রশ্বাসসংক্রান্ত সংক্রমণ ব্যাধি । চিকিৎসাবিজ্ঞানীরা এখনো এর প্রতিষেধক বের করতে পারেননি । সংক্রমণের পর লক্ষণগুলো পরিস্ফুট হতে ১০ দিন থেকে দুই সপ্তাহ পর্যন্ত সময় লাগতে পারে । রোগটি ছড়ায় মূলত আক্রান্ত কোনো ব্যক্তির হাঁচি-কাশি থেকে ।করোনাভাইরাস দেহে সংক্রমণের ২ থেকে ১০ দিনের মধ্যে উপসর্গগুলি প্রকাশ পায়, যার মধ্যে আছে জ্বর, শুকনো কাশি ও শ্বাসকষ্ট। সঠিক সময়ে চিকিৎসা না করালে পরবর্তীতে তীব্র শ্বাসকষ্ট ও অন্যান্য জটিলতার কারণে মৃত্যুর ঝুঁকি থাকে। করোনাভাইরাস নিয়ে সাড়া বিশ্বে স্বাস্থ্য জরুরি অবস্থা + ঘোষণা করেছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (WHO)। সাবধানতার প্রয়োজন বললেও এখনই আতঙ্কিত না হওয়ার অনুরোধ জানিয়েছেন WHO-এর ডিরেক্টর জেনারেল।