“গরু গ্রহণ করে অক্সিজেন ছাড়ে ও অক্সিজেন” বিজেপি

আমাদের পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতে গরু কে কেন্দ্র করে সহিংসতা-হত্যাযজ্ঞ এর মত নিকৃষ্ট ঘটনা ঘটেছে। বারবার ক্ষমতাসীন দল বিজেপির বিভিন্ন নেতার বক্তব্যে গরুর বন্দনা উঠে এসেছে। কারনে অকারনে গুরু হয়ে উঠেছে খবরের শিরোনাম। এরই পরিক্রমায় উত্তরাখণ্ডের মুখ্যমন্ত্রী ত্রিবেন্দ সিং নতুন মাত্রা যোগ করে আবারো গরুকে খবরের শিরোনামে করেছেন। তিনি দাবি করেছেন, গরুই একমাত্র প্রাণী যে অক্সিজেন গ্রহণের পাশাপাশি বাতাসে অক্সিজেন ছাড়ে। এ খবর দিয়েছে দ্য টাইমস অব ইন্ডিয়া।
খবরে বলা হয়, রাওয়াতের মন্তব্য নিয়ে দেশজুড়ে যেমন বিতর্ক শুরু হয়েছে তেমনি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে হচ্ছে অহরহ হাসি-তামাসা। তৈরি হয়েছে হাজার হাজার ট্রোল। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোয় ভাইরাল হয়ে যাওয়া একটি ভিডিওতে ত্রিবেন্দ্রকে গরুর প্রশংসায় বলতে শোনা যায়, গরু আমাদের প্রাণবায়ু দেয় বলেই তাকে মাতা বলা হয়। তিনি আরও বলেন, ‘ শ্বাসকষ্টের সমস্যাও সারিয়ে দিতে পারে গরু। এছাড়া হার্ট ও কিডনিসহ পুরো শরীরের জন্যই গোবর ও গোমূত্র খুবই উপকারী।

উত্তরাখণ্ডের মুখ্যমন্ত্রী ত্রিবেন্দ সিং। ছবিঃ সংগৃহীত

গরুর কাছাকাছি থাকলে টিবি রোগ সেরে যায়। আমাদের বিজ্ঞানীরাও এখন এমনটা জানাচ্ছেন।’ দিনকয়েক আগে দেরাদুনের একটি অনুষ্ঠানে এসব বলেন তিনি। এ বিষয়ে মুখ্যমন্ত্রীর কার্যালয়ের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক কর্মকর্তা জানান, এই রাজ্যে এটাই মানুষের বিশ্বাস। আর মানুষের বিশ্বাসের কথাই তুলে ধরেছেন মুখ্যমন্ত্রী। কোনও মুমূর্ষু রোগী গরুর কাছাকাছি থাকলে তার রোগ দ্রুত সেরে যাবে। তিনি আরো বলেন, গবেষণায় উঠে এসেছে যে গোমূত্রের উপকারিতা অপরিসীম। পাহাড়ে থাকা মানুষেরা বিশ্বাস করেন, গরু অক্সিজেন ত্যাগ করে।

গরু নিয়ে ভারতীয় মন্ত্রীদের এমন অদ্ভূত মন্তব্যের ঘটনা নতুন নয়। এর আগেও একাধিক ভারতীয় নেতা গরুর উপকারিতা নিয়ে আকাশ কুসুম মন্তব্য করে সমালোচিত হয়েছেন। এর আগে ২০১৭ সালে রাজস্থানের তৎকালীন শিক্ষামন্ত্রী বাসুদেব দেববানি এক অনুষ্ঠানে একই দাবি করেন। তিনি আরও দাবি করেন, গরুর কাছে গেলে সর্দি-কাশি ভালো হয়ে যায়। যদিও জাতিসংঘ অনুসারে, গরু মিথেন গ্যাস তাগ করে। এছাড়া গতবছর উত্তরাখণ্ডে গরুকে রাষ্ট্রমাতা ঘোষণা করতে প্রস্তাবও উত্থাপিত হয় বিধানসভায়।
উল্লেখ্য, সংখ্যাগরিষ্ঠ হিন্দু ধর্মালম্বীর দেশ ভারত। হিন্দুরা গরুকে পবিত্র প্রাণী হিসেবে বিবেচনা করে থাকে। ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ক্ষমতায় আসার পর থেকে দেশটিতে হিন্দু জাতীয়তাবাদের উত্থান ঘটেছে। ক্ষমতাসীন বিজেপি নেতারা ধর্মীয় বিষয়ের রাজনীতিকীকরণ করে উস্কে দিচ্ছে সহিংসতা। গো-রক্ষার নামে নির্যাতন ও খুন করা হচ্ছে মুসলমান ও দলিত সম্প্রদায়ের মানুষদের। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে বিভিন্ন ঘটনায় গরু চোর সন্দেহে কয়েক ডজন মানুষকে হত্যা করা হয়েছে।