জাপানের প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবে চান একটি স্বাধীন সার্বভৌম জাপান

জাপানের অবস্থান

জাপানের জাতীয়তাবাদী প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবে একটি ঐতিহাসিক বিজয়ের মাধ্যমে তৃতীয় বারের মত দেশটির প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত  হয়েছেন ।হিরোশিমা আর নাগাসাকিতে পারমানবিক বোমার বিস্ফোরনের পর জাপান আমেরিকার কাছে  আত্বসমরপন করে । এখনো জাপানে প্রায়  পঞ্চাশ হাজার সৈন্যের  আমেরিকান সেনাবাহিনির ঘাটি রয়েছে  । আর রয়েছে   হাজারো গোয়েন্দা কর্মকর্তা,  যারা জাপানের রাজনীতিতে বিভভিন্নভাবে হস্তক্ষেপ করে থাকে ।

জাপানের প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবে মনে করেন,

ই নির্বাচনের বিজয়টি একদিকে সংবিধান পরিবর্তন করতে সাহায্য করবে

এবং সেই সাথে সার্বভৌম জাপানের স্বপ্নের দিকে এগিয়ে নিয়ে যাবে।

 

দ্বিতিয় বিশ্বযুদ্ধের পর প্রথম কোন প্রধানমন্ত্রী তৃতীয় বারের ক্ষমতায় আসলেন যা আমেরিকান দের কাছে চিন্তার বিষয়  ।

শিনজো আবে প্রধানমন্ত্রী হিসাবে অনেক স্পষ্টভাষী, সাম্প্রতিক সময়ে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ শেষে যুক্তরাষ্ট্রের দখলদারিত্ব দ্বারা সংশোধিত সংবিধান পুনরায় নতুন করে সংশোধন করা নিয়ে মত দিয়ে ও জাপানে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে সামরিক উপস্থিতি নিয়ে সমালোচনা করে ব্যাপক আলোচিত হয়েছেন।

Shinzō Abe April 2015.jpg

 

তিনি নির্বাচনে ৮০৭ টি ভোটের মধ্যে পাওয়া ৫৫৩ টি ভোটকে জাপানের জাতীয়তাবাদী আন্দোলনের ক্রমবর্ধমান জনপ্রিয়তার একটি চিহ্ন হিসেবে দেখেছেন।

 

জাপানের প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবে সংবিধান সংশোধন নিয়ে যে মত দেন তার মধ্যে সংবিধান এর ৯ম ধারাটি অন্যতম। এই ধারাতে তিনি সংশোধিত হিসাবে উল্লেখ করেন, যা এই ধারাটিতে জাপান অপর পক্ষের সাথে যুদ্ধে যাওয়ার অধিকারকে বাতিল করে এবং দেশটির নিজিস্ব কোন সামরিক বাহিনী থাকবে না।

শিনজো আবে  ব্যক্তিগত বিবরণ

জন্ম 安倍晋三 (Abe Shinzō?)
২১ সেপ্টেম্বর ১৯৫৪ (বয়স ৬৪)
টোকিওজাপান
জাতীয়তা Japanese
রাজনৈতিক দল Liberal Democratic
দাম্পত্য সঙ্গী আকিয়ে মাতসুজাকি
বাসস্থান Kantei
প্রাক্তন ছাত্র

Seikei University

University of Southern California

দ্বিতীয় বিশ্ব যুদ্ধের পর জাপানের করা চুক্তিটির মূল বিষয় ছিলো, আনুষ্ঠানিকভাবে যুদ্ধের অবসান ঘোষণা করা এবং সেই সাথে বিরোধপূর্ণ অঞ্চলগুলো থেকে নিজেদের দাবি ত্যাগ করে যুদ্ধের ক্ষতিপূরণ নির্ধারণের করা। জাপানে সংবিধানের পররাষ্ট্র নীতির অন্যতম বৈশিষ্ট হলো, আন্তর্জাতিক দ্বন্দ্ব নিষ্পত্তিতে সামরিক বাহিনীর ব্যবহার না করে নিজ সামরিক স্ব-প্রতিরক্ষায় বাহিনীর ব্যবহার সীমাবদ্ধ রাখা।

 


সংক্ষিপ্ত ইতিহাস ঃ

সাম্রাজ্যবাদিদের বিরুদ্ধে জাপানের যুদ্ধ Image result for japan bangladesh

১৯৩৭ সালে জাপান সাম্রাজ্য ব্রিটিশ ও ফরাশি দখলকৃত  চীনের বিভিন্ন  অঞ্চলে আক্রমণ চালায়। এই ঘটনা দ্বিতীয় চীন-জাপান যুদ্ধ (১৯৩৭-১৯৪৫) নামে পরিচিত। জাপান সাম্রাজ্যের সেনাবাহিনী সহজেই রাজধানী নানজিং দখল করে নেয় । এরপর ১৯৪০ সালে জাপান সাম্রাজ্য ফরাসি ইন্দোচীন আক্রমণ করে। এই ঘটনার পরই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র জাপানের উপর একটি তেল নিষেধাজ্ঞা স্থাপন করে। ১৯৪১ সালের ৭ ও ৮ ডিসেম্বর জাপানি বাহিনী পার্ল হারবার আক্রমণ করে, মালয়, সিঙ্গাপুর ও হংকংয়ে ব্রিটিশ বাহিনীকে আক্রমণ করে এবং যুদ্ধ ঘোষণা করে দেয়।

এর ফলে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্য প্রশান্ত মহাসাগরে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের প্রাঙ্গনে প্রবেশ করে।১৯৪৫ সালে মাঞ্চুরিয়ায় সোভিয়েত আক্রমণ ও হিরোশিমা ও নাগাসাকিতে পারমাণবিক বোমা বিস্ফোরণের পর ১৫ অগস্ট জাপান নিঃশর্ত আত্মসমর্পণে রাজি হয়।এই যুদ্ধের ফলে জাপান ও বৃহত্তর পূর্ব এশীয় ভূ-সম্পদ ক্ষেত্রের লক্ষাধিক মানুষের প্রাণহানি ঘটে এবং জাপানের অধিকাংশ শিল্প ও পরিকাঠামো ধ্বংসপ্রাপ্ত হয়। মিত্রশক্তি (মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বে) লক্ষ লক্ষ জাপানি বংশোদ্ভুতকে উপনিবেশ ও এশিয়ার বিভিন্ন সামরিক ক্যাম্প থেকে স্বদেশে পাঠিয়ে দেয়। এর ফলে জাপান সাম্রাজ্য ধ্বংসপ্রাপ্ত হয় এবং জাপানি উপনিবেশগুলি স্বাধীনতা অর্জন করে।

১৯৪৬ সালের ৩ মে কয়েক জন যুদ্ধাপরাধে অভিযুক্ত জাপানি সেনা আধিকারিকের বিচারের জন্য মিত্রশক্তি দূরপ্রাচ্য আন্তর্জাতিক সামরিক ট্রাইব্যুনালের আয়োজন করে। ব্যাক্টেরিওলজিক্যাল রিসার্চ ইউনিট ও সম্রাটের পরিবার যুদ্ধাপরাধে অভিযুক্ত হলেও, মিত্রশক্তির সুপ্রিম কম্যান্ডার কর্তৃক তাঁরা বিচার থেকে অব্যাহতি পান

সার্বভৌমত্বের পুনরুদ্ধার দিবস পালন  শুরু 

২৮ এপ্রিল – আমেরিকার সাথে চুক্তির দিন হিসাবে জাপান সার্বভৌমত্বের পুনরুদ্ধার দিবস পালন করে থাকে 

Image result for japan bangladesh

সাম্প্রতিক “সার্বভৌমত্বের পুনরুদ্ধার দিবস” এর দিন জাপানের সম্রাট আকিহিতো উপস্থিতিতে প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবে এমন কিছু “প্রত্যাশা ও দৃঢ়সংকল্পের অনুভূতি” ব্যক্ত করেন যা, দেশটির যুদ্ধোত্তর সার্বভৌমত্ব পুনর্নির্মাণ আহ্বান হিসাবে বিবেচিত হয়। এই আহ্বানের ফলশ্রুতিতে তিনি সার্বভৌম জাপান প্রতিষ্ঠার পক্ষে তার সমর্থন জাগিয়ে তুলেছেন।জাপান বিশ্বের অন্যতম পরাক্রমশালী শক্তিধর দেশ হওয়া সত্ত্বেত্ত, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের হস্তক্ষেপে দেশটিতে যে একটি শান্তিবাদী সংবিধান গৃহীত হয় তা যে কোন গর্বিত রাষ্ট্র ও রাষ্ট্রের জন্য অপমান জনক।

জাপানে জাতীয়তাবাদী আন্দোলনে যে নতুন মাত্র যোগ হয়েছে,

তা একটি সার্বভৌম, নতুন স্বাধীন জাপানের জন্ম দিতে পারে।

জাপানের স্বাধীনতাকামী জনগণের জন্য রইল বাঙ্গালির বিপ্লবি সালাম