ক্ষতিকারি মশাবাহিত রোগ – চিকুনগুনিয়া – থেকে বাচার উপায়

 

 চিকুনগুনিয়া  রোগের  আক্রান্তের ম্রিত্যুর হার এক হাজারে এক জন । বৃদ্ধ আর নবজাতকরা এও রোগের আক্রান্ত হলে সবচেয়ে বেশি কষ্ট পায় । চিকুনগুনিয়া রোগিদের সাথে কথা বলে জানা গেছে এই রোগিদের সকলেরই  সবার প্রথমে ব্যাথা শুরু হয়েছে। ব্যাথাটা প্রথমে পা অর্থাৎ হাটুর জয়েন্ট থেকে শুরু হয়।

 

ভয়ের ব্যাপার হচ্ছে বয়স্ক বাচ্চাদের নিয়ে   এবং যাদের শরীরে অলরেডি কোনো রোগ আছে তাদের নিয়ে।

 

 

এবং কয়েক ঘন্টার মধ্যে হাটা চলা করার ক্ষমতা, সোজা হয়ে দাড়ানোর ক্ষমতা নাই করে দেয়। এরপর ধীরে ধীরে কয়েক ঘন্টার মধ্যেই জ্বর চলে আসে। জ্বর ১০০-১০৫ এর মধ্যে যেকোনো রকমই হতে পারে।Related image

বেশিরভাগ ক্ষেত্রে তিন থেকে চার দিনের মধ্যে জ্বর সেরে যায়। তবে হাড়ের জোড়ের ব্যথা নাছোড়বান্দায় রূপ নেয়। ব্যথার তীব্রতাও প্রচণ্ড। ফলে রোগীর স্বাভাবিক হাঁটাচলা, হাত দিয়ে কিছু ধরা এমনকি হাত মুঠ করতেও বেশ কষ্ট হয়। আর শরীর প্রচণ্ড দুর্বল হয়ে পড়ে।

চিকুনগুনিয়া (ইংরেজি ভাষায়: Chikungunya) হচ্ছে চিকুনগুনিয়া ভাইরাস দ্বারা সৃষ্ট একটি সংক্রমণ। এই ভাইরাস শরীরে প্রবেশের দুই থেকে চার দিনের মধ্যে আকস্মিক জ্বর শুরু হয় এবং এর সাথে অস্থিসন্ধিতে ব্যথা থাকে যা কয়েক সপ্তাহ, মাস বা বছর পর্যন্ত স্থায়ী হতে পারে।[২][৩][৪] এই রোগে মৃত্যু ঝুঁকি প্রতি দশ হাজারে এক জন বা এর চেয়েও কম তবে বয়স্কদের ক্ষেত্রে এই রোগের জটিলতা তুলনামূলক বেশি হয়

যেকোনো  রোগের  ভয়াবহতা বাড়িয়ে দেয় চিকনগুনিয়া। তাই যারা হার্টের সমস্যা, লাং এর সমস্যা, কিডনির সমস্যায়, ডায়াবেটিক এ ভুগছেন তাদের অবশ্যই অনেক বেশি  অতিরিক্ত সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে।

 

অ্যান্টিবায়োটিক সেবনে কোনো উপকার নেই।বরং অ্যান্টিবায়োটিকের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দীর্ঘমেয়াদে সমস্যা তৈরি করতে পারে।

Related image

চিকনগুনিয়া শব্দের অর্থই হচ্ছে বোন ক্রাশার।  চিকনগুনিয়ার প্রধান লক্ষন হচ্ছে তীব্র ব্যাথা। অনেক সময় এই ভাইরাসে আক্রান্ত হলেও কোনো উপসর্গ প্রকাশ পায় না। সাধারণত ৭২-৯৭% ক্ষেত্রে উপসর্গ দেখা দেয়।

রোগটি সাধারণত আকস্মিক উচ্চমাত্রার জ্বর, জয়েন্টে ব্যথা ও ফুসকুড়ি নিয়ে শুরু হয়। ফুসকুড়ি রোগের শুরুতেই দেখা দিতে পারে তবে অনেক সময় রোগ শুরু হওয়ার দুই থেকে তিন দিন পর জ্বর কমতে শুরু করলে ফুসকুড়ির আবির্ভাব হয়।

এছাড়া অন্যান্য উপসর্গের মধ্যে রয়েছে মাথাব্যথা, ক্লান্তি, পেটব্যথা, ফটোফোবিয়া বা আলোর দিকে তাকাতে সমস্যা, কনজাংটিভাইটিস।বড়দের আর্থ্রাইটিস বা জয়েন্টে প্রদাহ হতে পারে । 

 দিনে দিনে চিকুনগুনিয়া শক্তিশালী রুপ নিচ্ছে এবং তিনদিনেই মাল্টি অর্গান ডিস্ফাংশন করে দিতে সক্ষম। ফলে এই রোগ থেকে খুব দ্রুত ডেংগু, টাইফয়েড, নিউমোনিয়া বা হার্ট,লাং, কিডনির ডিস্ফাংশন হচ্ছে। 

 

Related image

চিকিৎসা করবেন কিভাবে ?

এই রোগের বিশেষ কোনো ওষুধ বা টিকা নেই। প্রতিদিন ছয় ঘণ্টা পর কিংবা তিনবেলা প্যারাসিটামল খেতে পারেন। তবে কোনো ওষুধই চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া খাওয়া উচিত নয়।

এছাড়া প্রচুর পরিমাণে পানি পান করার পাশাপাশি ডাবের পানি, স্যালাইন, লেবুর সরবত ইত্যাদি গ্রহণ করতে হবে।
এই রোগ থেকে দ্রুত রিকভার করার সবচেয়ে সহজ উপায় হচ্ছে একদম বেড রেস্ট। যত রেস্ট নিবেন তত ব্যাথা থেকে দ্রুত রিকভার সম্ভব। আর প্রচুর পানি, ভিটামিন সি জাতীয় ফলমূল খেতে হবে। এই সময় শরীরের প্রয়োজনীয় লবনের ঘাটতি দেখা দেয় তাই ডাক্তাররা মাস্ট স্যালাইন খাওয়ার পরামর্শ দেন।
সঠিকভাবে রেস্ট না নিয়ে রিকভার না করেন তাহলে কয়েক সপ্তাহ থেকে কয়েক মাসের মধ্যে আবার ফিরে আসতে পারে। অনেকজন পেলাম এখন পর্যন্ত যাদের দ্বিতীয়বার একদম শুরু থেকে সেইম লক্ষণ প্রকাশ পেয়ে রোগটা ফিরে এসেছে।

Related image
প্রোতিরোধ ঃ


 

১. এখন পযর্ন্ত চিকুনগুনিয়া কোনো প্রতিষেধক আবিষ্কার হয়নি । জ্বর হলে এক সপ্তাহ সাবধানে থাকতে হবে যেন মশা না কামড়ায়। কারণ, মশা কামড় দিলে মশার মাধ্যমে চিকুনগুনিয়া অন্যদের দেহে ছড়াবে।

Image result for aedes mosquito breeding

২. মশা নিয়ন্ত্রণ ও ঘুমানোর সময় মশারি টাঙিয়ে ঘুমানো, লম্বা হাতল-যুক্ত জামা ও ট্রাউজার পরে থাকা, বাড়ির আশেপাশে পানি জমতে না দেয়া ইত্যাদি প্রতিরোধ ব্যবস্থা গ্রহণ করা যেতে পারে। শুধু স্ত্রী মশা দিনের বেলা কামড়ায়। এরা একবারে একের অধিক ব্যক্তিকে কামড়াতে পছন্দ করে। এদের একবার রক্ত খাওয়া শেষে ডিম পাড়ার পূর্বে তিন দিনের বিশ্রামের প্রয়োজন হয়। এদের ডিমগুলো পানিতে এক বছর পর্যন্ত বাঁচতে পারে।

শুরু করুন  মশার বাসস্থান ধ্বংস করার দায়িত্ব – এতে আপনার পরিবার সুরক্ষিত থাকবে 

 

৩. অল্প পরিমাণ জমে থাকা পানিও ডিম পরিসফুটনের জন্য যথেষ্ট। এডিস মশা স্থির পানিতে ডিম পাড়ে তাই বালতি, ফুলের টব, গাড়ির টায়ার প্রভৃতি স্থানে যেন পানি জমতে না পারে সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে।Image result for aedes mosquito facts

শুধু স্ত্রী মশা দিনের বেলা কামড়ায়। এরা একবারে একের অধিক ব্যক্তিকে কামড়াতে পছন্দ করে। একবার রক্ত খাওয়া শেষে ডিম পাড়ার পূর্বে তিন দিনের বিশ্রামের প্রয়োজন হয়।এদের ডিমগুলো পানিতে এক বছর পর্যন্ত বাঁচতে পারে।অল্প পরিমাণ জমে থাকা পানিও ডিম পরিস্ফুটনের জন্য যথেষ্ট।এডিস মশা স্থির পানিতে ডিম পাড়ে তাই বালতি, ফুলের টব, গাড়ির টায়ার প্রভৃতি স্থানে যেন পানি জমতে না পারে সেদিকে খেয়াল রাখতে হবেImage result for chikungunya rash

আবাসস্থল ও এর আশপাশে মশার প্রজনন ক্ষেত্র ধ্বংস করতে হবে। বাসার আশপাশে ফেলে রাখা মাটির পাত্র, কলসী, বালতি, ড্রাম, ডাবের খোলা ইত্যাদি যেসব জায়গায় পানি জমতে পারে, সেখানে এডিস মশা প্রজনন করতে পারে। এসব স্থানে যেন পানি জমতে না পারে সে ব্যাপারে লক্ষ রাখা এবং নিয়মিত বাড়ির আশপাশে পরিষ্কার করা। সরকারের মশা নিধন কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করা।

যেহেতু এ মশা আক্রান্ত ব্যক্তির রক্ত থেকে জীবাণু নিয়ে অন্য মানুষকে আক্রান্ত করে, কাজেই আক্রান্ত ব্যক্তিকে যাতে মশা কামড়াতে না পারে সে ব্যাপারে ব্যবস্থা নেওয়া।

Related image

Image result for aedes mosquito breeding

 

Refarences: