তথ্য ও যােগাযােগ প্রযুক্তি এবং আমাদের বাংলাদেশ :প্রথম অধ্যায়


তথ্য ও যােগাযােগ প্রযুক্তি ও আমাদের বাংলাদেশ


ফেসবুক (www.facebook.com) : ফেসবুক সামাজিক যােগাযােগ ব্যবস্থার একটি ওয়েবসাইট। | ২০০৪ সালের ৪ঠা ফেব্রুয়ারি মার্ক জুকারবার্গ তার অন্য বন্ধুদের সঙ্গে নিয়ে এটি চালু করেন। বিনামূল্যে যে কেউ ফেসবুকের সদস্য হতে পারে। ব্যবহারকারীগণ বন্ধু সংযােজন, বার্তা প্রেরণ এবং তাদের ব্যক্তিগত তথ্যাবলি প্রকাশ, আদান-প্রদান ও হালনাগাদ করতে পারেন। এছাড়া এতে অডিও ও ভিডিও প্রকাশ করা যায়। ফেসবুকে যেকোনাে প্রতিষ্ঠান তাদের নিজস্ব পেজ যেমন খুলতে পারে, তেমনি সমমনা বন্ধুরা মিলে চালু করতে পারে কোনাে গ্রুপ। www.stastica.com এর রিপাের্ট মার্চ-২০১৫ অনুযায়ী বিশ্বে facebook ব্যবহারকারীর সংখ্যা ১৪১৫ মিলিয়ন। টুইটার (www.twitter.com) : টুইটারও একটি সামাজিক যােগাযােগ ব্যবস্থা। তবে ফেসবুকের সঙ্গে এর একটি মৌলিক পার্থক্য রয়েছে। এটিতে ব্যবহারকারীদের সর্বোচ্চ ১৪০ Character-এর মধ্যে তাদের মনোেভাব প্রকাশ ও আদান-প্রদান করতে হয়। এজন্য এটিকে মাইক্রোব্লগিংয়ের একটি ওয়েবসাইটও বলা যায়। ১৪০ অক্ষরের এই বার্তাকে বলা হয় টুইট (tweet)। টুইটারের সদস্যদের টুইট বার্তাগুলাে তাদের প্রােফাইল পাতায় দেখা যায়। টুইটারের সদস্যরা অন্য সদস্যদের টুইট পড়ার জন্য সে সদস্যকে অনুসরণ বা follow করতে পারেন। কোনাে সদস্যকে যারা অনুসরণ করে তাদেরকে বলা
হয় follower বা অনুসারী। বিনোদন ও আইসিটি তথ্য ও যােগাযােগ প্রযুক্তির উন্নয়নের সাথে বিনােদনের জগতে একটা নতুন দিক উন্মােচিত হয়েছে। এটি ঘটেছে দুইভাবে। প্রথমত, বিনােদনটি কীভাবে মানুষ গ্রহণ করবে সেই প্রক্রিয়াটিতে একটা মৌলিক পরিবর্তন হয়েছে। দ্বিতীয়ত, বিনােদনের ভিন্ন ভিন্ন মাধ্যমগুলােতে একটা গুণগত পরিবর্তন হয়েছে। দেখা যাক বিনােদন গ্রহণের প্রক্রিয়ায় পরিবর্তনটি কীভাবে ঘটেছে। একটা সময় ছিল যখন বিনােদনের জন্য মানুষকে ঘরের বাইরে যেতে হতাে। সিনেমা দেখতে হলে সিনেমা হলে যেতে হতাে, খেলা দেখতে হলে খেলার মাঠে যেতে হতাে, গান শুনতে হলে গানের জলসায় যেতে হতাে। এখন এধরনের বিনােদনের জন্যে মানুষের আর ঘর থেকে বের হতে হয় না। প্রথমে রেডিও, তারপর টেলিভিশন এসেছে। তারপর এসেছে কম্পিউটার। একসময় কম্পিউটার সংযুক্ত হয়েছে ইন্টারনেটের সাথে । আমরা আবিষ্কার করেছি একজন মানুষ চার দেওয়ালের ভেতরে আবদ্ধ থেকেই পৃথিবীর প্রায় সব ধরনের বিনােদন উপভােগ করতে পারে। প্রথম যখন কম্পিউটার আবিষ্কার হয়েছিল তখন তার মূল কাজ ছিল কমপিউট বা হিসাব করা, শুধু বড় বড় প্রতিষ্ঠান বা সরকার একটা কম্পিউটারের মালিক হতে পারত। প্রযুক্তির উন্নতির সাথে সাথে কম্পিউটার সহজলভ্য হয়ে এসেছে এবং একসময় মানুষ তার নিজের ব্যক্তিগত কাজের জন্যে কম্পিউটার ব্যবহার করতে শুরু করেছে। কম্পিউটার যখন শক্তিশালী হয়েছে তখন এটি শুধু লেখালেখি বা হিসাব-নিকাশের জন্যে ব্যবহৃত
হয়ে ধীরে ধীরে বিনােদনের জন্যে ব্যবহৃত হতে শুরু করেছে। এখন সাধারণ মানুষ কম্পিউটারকে সম্ভবত সবচেয়ে বেশি ব্যবহার করে বিনােদনের জন্যে। গান, চলচ্চিত্র, আলােকচিত্র সবকিছুই এখন কম্পিউটার দিয়ে করা যায়। তথ্যপ্রযুক্তির কারণে বিনােদন গ্রহণের প্রক্রিয়াটিতে যেরকম পরিবর্তন এসেছে ঠিক সেরকম
পরিবর্তন এসেছে বিনােদনের বিষয়গুলােতে। সঙ্গীতকে ডিজিটাল রূপ দেওয়ায় এখন আমরা কম্পিউটারে 3 গান শুনতে পারি। ঠিক একইভাবে আমরা ভিডিও বা চলচ্চিত্র দেখতে পারি। সিডি রম কিংবা ডিভিডি বের
তথ্য ও যােগাযােগ প্রযুক্তি
হওয়ার পর সেখানে বিশাল পরিমাণের তথ্য রাখা সম্ভবপর হয়েছে। সিনেমা হলে না গিয়ে ঘরে বসে কম্পিউটার কিংবা টেলিভিশনে ডিভিডি থেকে চলচ্চিত্র দেখা এখন খুবই সাধারণ একটা বিষয়। ফাইবার অপটিক নেটওয়ার্ক বসানাের পর দ্রুতগতির ইন্টারনেট সহজলভ্য হতে শুরু করেছে। কাজেই এখন একজনকে আর গান শােনার জন্যে কিংবা চলচ্চিত্র দেখার জন্যে অডিও সিডি বা ডিভিডির উপর নির্ভর করতে হয় না। ইন্টারনেট ব্যবহার করে সরাসরি গান বা চলচ্চিত্র উপভােগ করা সম্ভব হচ্ছে। শুধু তাই নয় রেডিও বা টেলিভিশন চ্যানেলগুলাে এখন ইন্টারনেট ব্যবহার করে শােনা ও দেখা যায় এবং সেগুলাে অনেক সময়েই রেকর্ড করা থাকে বলে কাউকেই আর কোনাে কিছুর জন্যে নির্দিষ্ট সময় অপেক্ষা করতে হয় না, যখন যেটি দেখার ইচ্ছে করে তখনই সেটা দেখতে পারে।
তথ্যপ্রযুক্তি উন্নত হবার পর নতুন কিছু বিনােদনের জন্ম হয়েছে যেটি আগে উপভােগ করা সম্ভব ছিল না, তার একটি হচ্ছে কম্পিউটার গেম। সারা পৃথিবীতেই এখন কম্পিউটার গেমের বিশাল শিল্প তৈরি হয়েছে এবং নানা ধরনের কম্পিউটার গেমের জন্ম হয়েছে। কম্পিউটার গেমের ব্যাপক জনপ্রিয়তা দেখেই আমরা আন্দাজ করতে পারি এটি বিনােদনের অত্যন্ত সফল একটি মাধ্যম। এর সাফল্যের প্রধান একটি কারণ হচ্ছে এটি ছােট শিশু থেকে প্রাপ্ত বয়ক একজন মানুষ সবাইকেই তার নিজের রুচি মাফিক আনন্দ দিতে পারে। একজন আরেক জনের সাথে কম্পিউটার গেম খেলতে পারে, কম্পিউটারের সাথে খেলতে পারে এমনকি নেটওয়ার্ক ব্যবহার করে বাইরের কারাে সাথেও খেলতে পারে। সত্যি কথা বলতে কি, অনেক ক্ষেত্রেই এই বিনােদন উপভােগের তীব্রতা এত বেশি হতে পারে যে, সেটি এক ধরনের আসক্তির জন্ম দিতে পারে এবং সে কারণে কম্পিউটার গেম উপভােগ করার ব্যাপারে সারা পৃথিবীতেই সবাইকে সতর্ক থাকার কথা বলা হচ্ছে। তথ্যপ্রযুক্তি বিনােদন সৃষ্টির ব্যাপারেও এক ধরনের বড় ভূমিকা রেখেছে। অ্যানিমেশন বা কার্টন তৈরি করা এক সময় অনেক কঠিন একটা বিষয় ছিল। তথ্যপ্রযুক্তি এবং শক্তিশালী কম্পিউটারের কারণে এখন এটি অনেক সহজ হয়ে গেছে। শুধু তাই নয় সৃষ্টিশীল মানুষের সৃজনশীলতার কারণে সম্পূর্ণ নতুন এক ধরনের ব্যাপার ঘটতে শুরু করেছে। সত্যিকারের অভিনেতা অভিনেত্রী ছাড়াই গ্রাফিক্স নির্ভর চলচ্চিত্রের ডিজিটাল অভিনেতা-অভিনেত্রীর জন্ম হতে শুরু করেছে। বিখ্যাত ব্যবসাসফল চলচ্চিত্রে কাল্পনিক প্রাণী ডাইনােসর কিংবা ভিন্ন জগতের প্রাণী তৈরি করার জন্যে শক্তিশালী কম্পিউটার ব্যবহার করা এখন অত্যন্ত সাধারণ একটি বিষয়। এক কথায় আমরা বলতে পারি, তথ্যপ্রযুক্তির কারণে শুধু যে নতুন নতুন বিনােদনের জন্ম নিচ্ছে তা নয়, সেই বিনােদনগুলাে এখন একেবারে সাধারণ মানুষের কাছেও পৌঁছে যাচ্ছে। সবচেয়ে বড় কথা এটি মাত্র শুরু,
ভবিষ্যতে আইসিটি নির্ভর বিনােদন কোন পর্যায়ে যাবে সেটি কল্পনা করাও অসমভব!


ডিজিটাল বাংলাদেশ

বর্তমান সরকার প্রথমবারের মতাে ২০২১ সালের মধ্যে ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ে তােলার একটি পরিকল্পনা গ্রহণ করে। একটা রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের ভেতর দিয়ে ১৯৭১ সালে আমরা আমাদের স্বাধীনতা অর্জন করেছি, ২০২১ সালে তার অর্ধশতাব্দী পূর্ণ হবে এবং সে কারণে এই সময়ের ভেতরে আমাদের প্রিয় মাতৃভূমিকে একটি বিশেষ জায়গায় নেওয়ার একটি স্বপ্ন আমাদের সবাইকে স্পর্শ করেছিল। তাই ডিজিটাল বাংলাদেশ কথাটি শুধু একটি কথা হয়ে থাকেনি। এটাকে বাস্তবে রূপ দেওয়ার জন্যে এই দেশের সরকার এবং সাধারণ মানুষ সবাই একটি বড় উদ্যোগ নিয়েছে। বাংলাদেশ ইতােমধ্যে বিশ্বের ৫৭তম দেশ হিসাবে ১১ মে, ২০১৮ দিবাগত রাত । ২.১৪ মিনিটে যুক্তরাষ্ট্রের কেনেডি মহাকাশ কেন্দ্র থেকে বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট ১ মহাকাশে প্রেরণ করেছে।

প্রথমেই আমাদের জানা দরকার এনালগ ও ডিজিটাল কথাটি দিয়ে আমরা কী বােঝাই। পরিবর্তনশীল (বিচ্ছিন্ন) ডাটাকে যখন সংকেতের মাধ্যমে প্রকাশ করা হয় তখন তাকে এনালগ সংকেত বলে। উদাহরণস্বরূপ আমাদের দৈনন্দিন তাপমাত্রার কথা ধরা যাক, দিনের বিভিন্ন সময় বিভিন্ন ধরনের তাপমাত্রা অনুভূত হয়। এই অনুভূত তাপমাত্রাকে যখন সংকেতরূপে ক, এনালগ প্রকাশ করি তখন তাকে এনালগ সংকেত বলি। এনালগ সংকেতের সাহায্যে আমরা নির্ভুল এবং সূক্ষ্ম তথ্য 39:30:54 পাই না, প্রাপ্ত মানের তারতম্য থাকে। এই এনালগ সংকেতকে নির্দিষ্ট পদ্ধতিতে দুইটি অবস্থার মাধ্যমে প্রকাশ করা হয়,
খ. ডিজিটাল এই অবস্থাগুলােকে অঙ্কের (Digit) মাধ্যমে প্রকাশ করার ফলে এনালগ সংকেতের তুলনায় আরও নির্ভুল এবং সূক্ষ্ম থেকে সূক্ষ্মতর তথ্য পাওয়া যায়। Digit এর মাধ্যমে সংকেত প্রকাশের জন্য ব্যবহৃত এই ধরনের সংকেতকে ডিজিটাল সংকেত বলা হয়। যেমন: ধর, কাঁটাযুক্ত ঘড়ি এনালগ সংকেত প্রদর্শন করে, পক্ষান্তরে কাটাবিহীন ঘড়ি ডিজিটাল সংকেত প্রদর্শন করে। তবে ডিজিটাল বাংলাদেশ কথাটি শুধু একটি কম্পিউটার প্রস্তুত দেশ হিসেবে ব্যবহার করা হয়নি। এটি আরও অনেক ব্যাপক। ডিজিটাল বাংলাদেশ বলতে আসলে তথ্য ও যােগাযাগ প্রযুক্তি ব্যবহার করে গড়ে তােলা আধুনিক বাংলাদেশ বােঝানাে হয়। সব ধরনের প্রযুক্তি ব্যবহার করে এই দেশের শিক্ষা, স্বাস্থ্য, কর্মসংস্থান এবং দারিদ্র্য মােচনের অঙ্গীকার বাস্তবায়ন হচ্ছে ডিজিটাল বাংলাদেশের লক্ষ্য। এই লক্ষ্যে পৌছানাের জন্যে আমাদের পুরাতন মানসিকতার পরিবর্তন করে ইতিবাচক বাস্তবতা এবং উদ্ভাবনী চিন্তা করা খুব জরুরি। ডিজিটাল বাংলাদেশের পেছনের মূল কথাটি হচ্ছে দেশের মানুষের জন্যে গণতন্ত্র, মানবাধিকার, স্বচ্ছতা, দায়বদ্ধতা এবং সুবিচার নিশ্চিত করা এবং সেগুলাের জন্যে প্রযুক্তির সর্বোচ্চ ব্যবহার করা। তার চূড়ান্ত লক্ষ্য হচ্ছে সকল শ্রেণির সব ধরনের মানুষের জীবনের মান উন্নয়ন। ডিজিটাল বাংলাদেশ রূপকল্পের বাস্তবায়নের জন্যে সরকার চারটি সুনির্দিষ্ট বিষয়কে গুরুত্ব দিয়েছে; সেগুলাে হচ্ছে- মানবসম্পদ উন্নয়ন, জনগণের সম্পৃক্ততা, সিভিল সার্ভিস এবং দৈনন্দিন জীবনে তথ্যপ্রযুক্তির ব্যবহার। পৃথিবীর অন্য অনেক দেশের তুলনায় বাংলাদেশ তথ্যপ্রযুক্তির প্রসারের কাজটি শুরু করেছে দেরিতে। তাই অন্য অনেক দেশের তুলনায় বাংলাদেশ যথেষ্ট পিছিয়ে আছে। অতীতে তথ্য ও যােগাযােগ প্রযুক্তির গুরুত্ব যথাযথভাবে উপলদ্ধি না করলেও বর্তমানে এটি অত্যন্ত গুরুত্ব পাচ্ছে। সাবমেরিন ক্যাবলের সাথে যুক্ত হওয়ায় আমাদের দেশে এখন দ্রুত গতির ইন্টারনেট সংযােগ প্রদান সম্ভব হচ্ছে। প্রযুক্তি প্রসারের একটি সুন্দর দিক রয়েছে, কোনাে দেশ বা জাতির একটি নির্দিষ্ট প্রযুক্তিতে পিছিয়ে থাকলে সব সময়েই তাদের পিছিয়ে থাকতে হয় না। বড় বড় লাফ দিয়ে (Leap Frog) অন্যদের ধরে ফেলা যায়। তাই বাংলাদেশ তার সর্বশক্তি দিয়ে সামনে এগিয়ে অন্য দেশের সমান হবার চেষ্টা করছে।
সরকারের আগ্রহের কারণে দেশে তথ্যপ্রযুক্তির অবকাঠামাে গড়ে উঠতে শুরু করেছে। সারা দেশে ফাইবার ও অপটিক লাইন বসিয়ে প্রত্যন্ত অঞ্চল পর্যন্ত ইন্টারনেট সেবা দেওয়ার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। মাত্র এক-দেড় * দশক আগেও এদেশে টেলিফোনের সংখ্যা ছিল নগণ্য। এখন নির্দ্বিধায় বলা যায় এই দেশের প্রত্যেকটি
তথ্য ও যােগাযােগ প্রযুক্তি
প্রাপ্তবয়স্ক মানুষের হাতের নাগালে ফোন রয়েছে। ইউনিয়ন পর্যায়ে ইনফরমেশন সার্ভিস সেন্টার খােলা হয়েছে, প্রত্যন্ত এলাকায় পােস্ট অফিসগুলােকে ই-সেন্টারে রূপান্তরিত করে মােবাইল মানি অর্ডারের সুযোেগ করে দেওয়া হয়েছে। ইউনিয়ন ইনফরমেশন সেন্টারের সাথে সাথে ডিস্ট্রিক্ট ইনফরমেশন সেল এবং ন্যাশনাল ইনফরমেশন সেল দেশের অবকাঠামােতে একটা বড় সংযােজন। মােবাইল টেলিফোন দিয়ে ভর্তি পরীক্ষার রেজিস্ট্রেশন, পাবলিক পরীক্ষার ফলাফল জানা কিংবা ট্রেনের টিকেট কেনার মতাে কাজগুলাে নিয়মিতভাবে করা হচ্ছে। স্কুল-কলেজে তথ্য ও যােগাযোেগ প্রযুক্তির পাঠ সংযােজন করা হয়েছে- এই বইটি তার প্রমাণ। দেশের কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ে কম্পিউটার সায়েন্স পড়ানাে হচ্ছে। দেশের তরুণ প্রজন্ম বিভিন্ন সফটওয়্যার কোম্পানিতে যােগ দেওয়ার পাশাপাশি নিজেরা কোম্পানি গড়ে তুলছে এবং বিশাল সংখ্যক তরুণ-তরুণী ব্যক্তিগত পর্যায়ে আউটসাের্সিং করে দেশের অর্থনীতিকে মজবুত করছে। ২০১৮ সালের ১২ই মে তারিখটি আমাদের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এদিনে বাংলাদেশ বিশ্বের ৫৭তম রাষ্ট্র হিসেবে তার নিজস্ব স্যাটেলাইট বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-১’ মহাকাশে প্রেরণ করে। এতে ডিজিটাল বাংলাদেশ বাস্তবায়নে দেশআরও একধাপ এগিয়ে গেল। স্যাটেলাইটটি ব্যবহার করে শিক্ষা, চিকিৎসা, কৃষি, আবহাওয়ার পূর্বভাস নানা ক্ষেত্রে সুফল পাওয়ার পাশাপাশি বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অগ্রগতি লাভ করবে। টেলিভিশন সেবা ও জাতীয় নিরাপত্তার কাজেও এ স্যাটেলাইটটি ব্যবহার করা যাবে। বাংলাদেশের যেকোনাে প্রাকৃতিক দূর্যোগ মােকাবেলা ও ব্যবস্থাপনায় নতুন মাত্রা যােগ হবে। এছাড়াও বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইটের কারণে তথ্য ও যােগাযােগ প্রযুক্তি ব্যবহারের ক্ষেত্রে বৈদেশিক মুদ্রা সাশ্রয়ের সাথে সাথে প্রচুর পরিমাণে বৈদেশিক মুদ্রা আয়ও সম্ভব হবে। তথ্যপ্রযুক্তির এই সাফল্য শুনে কেউ যেন মনে না করে আমরা ইতােমধ্যে আমাদের লক্ষ্যে পৌছে গেছি- এটি মােটেও সত্যি নয়। এই পথে আমাদের আরাে দীর্ঘ পথ অতিক্রম করতে হবে। যেহেতু আমাদের দেশের বেশিরভাগ মানুষই গ্রামে থাকে তাই ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ে তােলার প্রথম ধাপ হচ্ছে এই গ্রামীণ মানুষকে তথ্য ও যােগাযােগ প্রযুক্তি সেবার আওতায় নিয়ে আসা। সেজন্য এখনাে বিশাল অবকাঠামাে গড়ে তুলতে হবে। তথ্যপ্রযুক্তির পুরাে সুবিধা পেতে হলে এক্ষেত্রে দক্ষ জনশক্তির প্রয়ােজন। স্কুল কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়ে লেখাপড়ার মান বাড়াতে হবে, আরাে বেশি সংখ্যক শিক্ষার্থীকে তথ্য ও যােগাযোেগ প্রযুক্তিতে দক্ষ করে গড়ে তুলতে হবে। ই-গভর্ন্যান্স এর মাধ্যমে সকল কাজে স্বচ্ছতা নিশ্চিত করতে হবে। নতুন প্রজন্মকে তাদের
নী ক্ষমতা কাজে লাগাতে উৎসাহী করতে হবে। বিশ্ববিদ্যালয় এবং তথ্য ও যােগাযােগ প্রযুক্তি শিল্পের মধ্যে সমন্বয় করতে হবে। তাহলেই আমরা প্রকৃত ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ে তুলতে পারব।
দলগত কাজ ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ে তুলতে করণীয় নিয়ে একটি পােস্টার ডিজাইন কর।।
I



Leave a Comment

Scroll to Top