এনআরসি বিরোধিতায় ক্ষোভে ফুঁসছে ভারতের আসামের জনগণ ও বিরোধীদলীয় নেতৃবৃন্দ

আজ ৩১ শে আগস্ট শনিবার ভারতের আসাম রাজ্যে প্রকাশ করা হয় জাতীয় নাগরিকপঞ্জি এনআরসি তালিকা, তালিকা প্রকাশের পর থেকেই দেশটির বিরোধীদলীয় নেতৃবৃন্দ ও জনগণ ক্ষোভে ফেটে পড়েন। এই তালিকাকে কেন্দ্র করে কেন্দ্রীয় সরকারের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগড়ে দিলেন ভারতের বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দ। লোকসভার কংগ্রেস দলনেতা এবং পশ্চিমবঙ্গের মুর্শিদাবাদ জেলার বাসিন্দা অধীররঞ্জন চৌধুরী কংগ্রেসের একটি বৈঠক শেষে বলেন, যেভাবে এনআরসি তালিকা তৈরি করা হয়েছে, তাতে বহু সঠিক নাম বাদ গেছে। ভারতের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ ব্যর্থ হয়েছেন সঠিক তালিকা তৈরি করতে।

১৯ লাখ মানুষের নাম বাদ পড়েছে তালিকা থেকে। সীমান্তবর্তী জেলার বাসিন্দা কংগ্রেসের এই নেতা আরো বলেন, আমার বাবাও বাংলাদেশের লোক ছিলেন। সেই হিসেবে তো আমিও বহিরাগত। আমাকেও বের করে দিক!

দিল্লির বিজেপি নেতা মনোজ তিওয়ারি দু’দিন আগেই বলেছিলেন, এবার দিল্লিতেও এনআরসি করা হবে। সেই প্রসঙ্গ টেনেও গেরুয়া শিবিরের তীব্র সমালোচনা করেন বহরমপুরের পাঁচবারের সাংসদ। তিনি বলেন, ভারত একটা ধর্মনিরপেক্ষ দেশ। এই তালিকা হওয়া উচিত ধর্মনিরপেক্ষতার শর্ত মেনেই। এই তালিকা লোকসভায় আনারও দাবি তোলেন অধীর।

তার কথায়, কোনও সত্যিকারের ভারতীয়র যেন নাম বাদ না যায়। তাদের সবাইকে সুরক্ষা দিতে হবে।

আসামের সাবেক মুখ্যমন্ত্রী তরুণ গগৈও এই তালিকার বিরোধিতা করেছেন। তার দাবি, সত্যিকারের যারা অনুপ্রবেশকারী, তাদের নাম তালিকায় রয়েছে, অথচ অসংখ্য ভারতীয়দের নাম বাদ। আজ আসামের বিজেপি সরকারের মন্ত্রী হিমন্ত বিশ্বশর্মাও এনআরসি নিয়ে হতাশা প্রকাশ করেছেন।

তিনি বলেন, বহু সত্যিকারের ভারতীয়দের নাম বাদ চলে গেছে। এরকম তালিকা হবে ভাবিনি। এতে উদ্দেশ্য ধাক্কা খাবে।

এনআরসির চূড়ান্ত তালিকা নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছে অল আসাম স্টুডেন্ট ইউনিয়ন (আসু)। তাদের দাবি এই তালিকা ত্রুটিপূর্ণ। সুপ্রিম কোর্টে যাওয়ার হুঁশিয়ারিও দিয়েছে সেই ছাত্র সংগঠন। আসামের ভূমিপুত্ররাই এনআরসি তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হবে, এই দাবি গোড়া থেকে তুলে এসেছে আসু। আজ সাংবাদিক বৈঠক করে সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক লুরিনজ্যোতি গগৈ বলেন, এই তালিকা অসম্পূর্ণ। ভুলে ভরা। যেভাবে সত্যিকারের নাগরিকদের নাম বাদ গেছে, তা অপ্রত্যাশিত।

সূত্রঃ কালের কন্ঠ