এন্টিভাইরাস সফটওয়্যারটি তার পূর্বজ্ঞান ব্যবহার করে সংক্রমিত অবস্থান থেকে আসল প্রােগ্রামকে ঠিক করে। একটি ভালাে এন্টিভাইরাস সাধারণভাবে প্রায় সব ধরনের ভাইরাস নির্মূল করতে পারে। নতুন ভাইরাস আবিষ্কৃত হওয়ার সাথে সাথে এন্টিভাইরাস Update করলে এর শক্তি ও কার্যক্ষমতা প্রতিনিয়ত উন্নত হয়। ফলে নতুন নতন ভাইরাস ধ্বংস করতে পারে। বর্তমানে অনেক এন্টিভাইরাস রয়েছে যেগুলাে ভাইরাস চিহ্নিত করে, নিমূল করে এবং প্রতিহত করে। আজকাল প্রায় প্রত্যেক অপারেটিং সিস্টেম সফটওয়্যারের সাথে সংযুক্ত অবস্থায় এন্টিভাইরাস সফটওয়্যার দেওয়া থাকে। এছাড়াও এখনকার এন্টিভাইরাসগুলাে ভাইব্রাস আক্রমণ করার পূর্বেই তা ধ্বংস করে অথবা ব্যবহারকারীকে সতর্ক করে। ফলে এগুলাে পূর্বের এন্টিভাইরাসের তুলনায় অনেক বেশি কার্যকর। এখানে একটি কথা অবশ্যই আমাদের মনে রাখতে হবে যে এন্টিভাইরাস সফটওয়্যার সবসময় হালনাগাদ (Update) রাখতে হবে। ভাইরাসের হাত থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য আজকাল বিনামূল্যে ইন্টারনেট থেকে এন্টিভাইরাস সফ্টওয়্যার ডাউনলােড এবং ইনস্টল করে আইসিটি যন্ত্রপাতির নিরাপত্তা অনেকাংশ নিশ্চিত করা যায়। উল্লেখযােগ্য কিছু এন্টিভাইরাস প্রােগ্রামের নাম হলাে
• এভিজি এন্টিভাইরাস সফ্টওয়্যার (ডাউনলােড ওয়েবসাইট www.avg.com) ও এভিরা এন্টিভাইরাস সফটওয়্যার (ডাউনলােড ওয়েবসাইট www.avira.com) ও এভাস্ট এন্টিভাইরাস সফটওয়্যার (ডাউনলােড ওয়েবসাইট www.avast.com) কম্পিউটার বা আমাদের আইসিটি যন্ত্রগুলােকে ভাইরাসমুক্ত রেখে ব্যবহার করতে আমরা নিচের পদ্ধতিগুলাে অনুসরণ করতে পারি। ১. অন্য যন্ত্রে ব্যবহৃত সিডি, পেনড্রাইভ, মেমােরি কার্ড ইত্যাদি নিজের যন্ত্রে ব্যবহারের পূর্বে ভাইরাস মুক্ত | করে নেয়া। (এন্টি ভাইরাস দ্বারা ক্যান করে নেওয়া) ২. অন্য কম্পিউটার থেকে কপিকৃত সফটওয়্যার নিজের কম্পিউটারে ব্যবহারের আগে সফটওয়্যারটিকে
ভাইরাস মুক্ত করা। ৩. অন্য যন্ত্রের কোনাে ফাইল নিজের যন্ত্রে ব্যবহারের পূর্বে ফাইলটিকে ভাইরাস মুক্ত করা। ৪. ইন্টারনেট থেকে কোনাে সফ্টওয়্যার নিজের কম্পিউটারে ডাউনলােড করে ইনস্টল করার সময়ে সতর্ক
থাকা। কারণ, ডাউনলােডকৃত সফটওয়্যারে ভাইরাস থাকলে তা থেকে তােমার কম্পিউটারটিও ভাইরাস
আক্রান্ত হতে পারে। ৫. অন্যান্য কম্পিউটারে বা যন্ত্রে ব্যবহৃত সফটওয়্যার কপি করে ব্যবহার না করা। ৬. কম্পিউটারে ভাইরাস প্রবেশ করলে সতর্কতামূলক বার্তা প্রদর্শন করার জন্য এন্টিভাইরাস সফটওয়্যারটিকে
হালনাগাদ করে রাখা প্রয়ােজন। ৭. প্রতিদিনের ব্যবহৃত তথ্য বা ফাইলসমূহ আলাদা কোনাে ডিস্ক বা পেনড্রাইভে ব্যাকআপ রাখা, তবে | এক্ষেত্রে ডিস্ক বা পেনড্রাইভটি অবশ্যই ভাইরাস মুক্ত হতে হবে । ৮. ই-মেইল আদান-প্রদানে সতর্কতা অবলম্বন করা। যেমন : সন্দেহজনক সাের্স থেকে আগত ই-মেইল open
করা। করলেও ভাইরাসমুক্ত করে তা খােলা উচিত।
৯. গেম ফাইল ব্যবহারের আগে অবশ্যই ভাইরাস চেক করতে হবে।
২০১৯
কম্পিউটার ও কম্পিউটার ব্যবহারকারীর নিরাপত্তা
পাসওয়ার্ড
পরিবারের সবাই বাড়ির বাইরে বেড়াতে গেলে সাধারণত আমরা বাড়ির দরজায় তালা লাগিয়ে যাই। কেন? বাড়ির নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য, তাই না। এখন একটু চিন্তা কর, তালা জিনিসটা আসলে কী? যে কেউ যেকোনাে চাবি দিয়ে তােমার বাড়ির তালাটি খুলতে পারে না। কারণ পৃথিবীর প্রত্যেকটি তালার জন্য ভিন্ন ভিন্ন চাবি রয়েছে। এক তালার চাবি দিয়ে অন্য একটি তালা খােলা যায় না। এভাবে আমরা তালা দিয়ে আমাদের বাড়িসহ অন্যান্য জিনিসের নিরাপত্তা নিশ্চিত করি। এখন অবশ্য নম্বর দেওয়া এক ধরনের তালা দেখা যায়, যেখানে নম্বর মিলিয়ে তালাটি খুলতে হয়। এক্ষেত্রে নম্বরটি চাবির কাজ করে। কিন্তু ডিজিটাল প্রযুক্তির এ যুগে আরাে অনেক কিছুর নিরাপত্তা নিয়ে আমাদের চিন্তা করতে হয়। তােমরা নিশ্চয়ই বুঝে ফেলেছ কীসের কথা বলছি। ঠিক ধরেছ, আমরা আমাদের তথ্য ও উপাত্তের নিরাপত্তার কথা বলছি। আইসিটির এ যুগে আমাদের গুরুত্বপূর্ণ
তথ্য, উপাত্ত ও সফটওয়্যার নিরাপত্তায় এক ধরনের তালা দিতে হয়। এ তালার নাম পাসওয়ার্ড। তােমরা অনেকে নিশ্চয়ই ইতােমধ্যে পাসওয়ার্ড তৈরি ও ব্যবহার করে ফেলেছ। তথ্য ও যােগাযােগ প্রযুক্তির ব্যবহার এখন সবখানে। আমাদের দেশও এর ব্যতিক্রম নয়। এর প্রসার যত বাড়ছে নিরাপত্তার প্রশ্নটি তত গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠছে। আমাদের ব্যক্তিগত সকল তথ্য যেমন ব্যাংক একাউন্ট, আয়করের হিসাব, চাকরির বিভিন্ন তথ্য ইত্যাদি ছাড়াও নানা তথ্য-উপাত্ত এখন ডিজিটাল ব্যবস্থার আওতায় আসছে। এছাড়াও আমাদের আইসিটি যন্ত্রপাতি যেমন-কম্পিউটার, ল্যাপটপ, ট্যাবলেট কিংবা মােবাইল ফোনগুলাে সফটওয়্যার দ্বারা পরিচালিত হয়। আমরা যখন ইন্টারনেট ব্যবহার করি তখন পৃথিবীর যেকোনাে প্রান্তের কম্পিউটার বা আইসিটি যন্ত্রের সাথে যােগযােগ করতে পারি। তেমনি অন্য যে কেউ আমাদের যন্ত্রের সাথে যােগাযােগ করতে পারে। তথ্য আদান-প্রদান করতে পারে। এর মাধ্যমে আমাদের ব্যক্তিগত গােপনীয় তথ্যও অন্যের কাছে চলে যেতে পারে কিংবা কেউ আমাদের যন্ত্রের সফটওয়্যারের ক্ষতি করতে পারে। এ অবস্থা থেকে রক্ষা পেতে আমাদের নিরাপত্তা প্রয়ােজন। এসব তথ্য ও আমাদের যন্ত্রের সফটওয়্যারসমূহ রক্ষা করতে পাসওয়ার্ডের কোনাে বিকল্প নেই। পাসওয়ার্ড দেওয়া থাকলে যে কেউ ইচ্ছা করলেই আমাদের তথ্য নিতে পারবে না বা ক্ষতি করতে পারবে না। তবে এখানে একটি কথা অবশ্যই জেনে রাখতে হবে যদি কেউ বুদ্ধি খাটিয়ে আমরা যে পাসওয়ার্ড দিয়েছিলাম তা ধরে ফেলতে পারে তাহলে সে আমাদের সকল তথ্য নিয়ে নিতে পারবে। তথ্য নষ্ট করতে চাইলে নষ্ট করতে পারবে। অনেকটা ডুপ্লিকেট চাবি বানিয়ে তালা খুলে ফেলার মতো। তাই পাসওয়ার্ড তৈরি করতে আমাদের অনেক দক্ষ হতে হবে। অন্য কেউ ধারণা করতে পারে এমন সহজ পাসওয়ার্ড যেমন তৈরি করা যাবে না আবার নিজেই ভুলে যেতে পারি এমন পাসওয়ার্ড তৈরি করা যাবে না। বেশিরভাগ মানুষ 123456 বা 654321 বা abcdef এ ধরনের পাসওয়ার্ড তৈরি করে। ফলে পাসওয়ার্ড জেনে যাওয়া বা ধরে ফেলা সহজ হয়। যদিও অনেক ব্যবহারকারী অনন্য বা Unique পাসওয়ার্ড তৈরি করাকে ঝামেলার কাজ মনে করে। তথ্য-উপাত্তের দিকটি বিবেচনায় নিলে Unique বা মৌলিক পাসওয়ার্ড তৈরি করা।
অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এ সাভার, কম্পিউটার বা যেকোনাে আইসিটি যন্ত্রে রক্ষিত তথ্য ও উপাত্তের নিরাপত্তা বিধানের সাথে সাথে
তথ্য ও যােগাযােগ প্রযুক্তি
গােপনীয়তা বজায় রাখার কাজটিও পাসওয়ার্ড করে থাকে। তােমার পাসওয়ার্ড যদিUnique না হয় তবে: ১. দুর্বল পাসওয়ার্ডের কারণে ভাইরাস সহজেই আক্রমণ করতে পারে। ২. হ্যাকারদের সহজেই হ্যাক করার সুযােগ করে দিতে পারে। এতে তােমার ব্যাংকে রাখা টাকা ছাড়াও | গুরুত্বপূর্ণ তথ্য অন্যের হাতে চলে যেতে পারে। ৩. তােমার সহজ পাসওয়ার্ডের কারণে আইসিটি যন্ত্রে রক্ষিত তথ্য নষ্ট করার সুযােগ তৈরি হতে পারে। কীভাবে মৌলিক পাসওয়ার্ড তৈরি করা যায়? এটি একটি সৃজনশীল কাজ। তােমার সৃজনশীলতাই তােমার তথ্য বা সফটওয়্যারের নিরাপত্তা ও গােপনীয়তা রক্ষা করতে পারে। তবে এক্ষেত্রে কিছু নিয়ম মেনে চললে কাজটি করতে আমাদের অনেক সুবিধা হবে। Unique পাসওয়ার্ড তৈরির সময় আমাদের লক্ষ রাখতে হবে: । নিজের বা পরিবারের কারাে নাম বা ব্যক্তিগত কোনাে তথ্য সরাসরি ব্যবহার না করা। যদিও পাসওয়ার্ডটি
মনে রাখার ক্ষেত্রে এটি আমাদের সাহায্য করে থাকে। । সংখ্যা, চিহ্ন ও শব্দ ব্যবহারের ক্ষেত্রে ছােট হাতের অক্ষর ও বড় হাতের অক্ষর মিশিয়ে দিলে ভালাে হয়।
এতে পাসওয়ার্ডটি সম্পর্কে অন্যের ধারণা করা অনেক কঠিন হয়ে যাবে। । পাসওয়ার্ডটি যেন অবশ্যই একটু বড় আকারের হয়। – পাসওয়ার্ড মনে রাখার জন্য আইসিটি যন্ত্র বা ডায়রি বা অন্য কোথাও পাসওয়ার্ড বা এর অংশবিশেষ লিখে
রাখা। । পাসওয়ার্ড মনে রাখার জন্য নিজের পছন্দের একটি সংকেত ব্যবহার করা। এটি হতে পারে প্রিয় কবিতা,
গল্প, লেখক, বৈজ্ঞানিক আবিষ্কার বা কোনাে ঐতিহাসিক ঘটনা। এ কাজগুলাের সাথে যদি সৃজনশীলতা যােগ হয় তবে পাসওয়ার্ডটি হয়ে উঠতে পারে