ভারতের সরকারদলীয় দল বিজেপি পার্লামেন্টে সংবিধানের ৩৭০ অনুচ্ছেদে থাকা জম্মু ও কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা বাতিল বাতিল করে। কাশ্মীর কে কেন্দ্রশাসিত সরকারের এলাকায় ভাগ করার পর যেকোনো অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা এড়ানোর জন্য বিশেষ সতর্কতামূলক ব্যবস্থা হিসেবে ন্যাশনাল কনফারেন্সের নেতা ওমর ও পিপলস ডেমোক্রেটিক পার্টির (পিডিপি) প্রধান মেহবুবাকে গ্রেপ্তার করা হয়। আটকের প্রায় একমাস পর জম্মু ও কাশ্মীরের সাবেক দুই মুখ্যমন্ত্রী ওমর আব্দুল্লাহ ও মেহবুবা মুফতিকে তাদের পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে দেখা করতে দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে ভারতীয় গণমাধ্যম। পরিবারের সদস্যরা গত সপ্তাহেই ওমর আব্দুল্লাহর সঙ্গে শ্রীনগরের হরি নিবাসে দুই দফা দেখা করেছেন বলে বেশ কয়েকটি সূত্রের বরাত দিয়ে এনডিটিভি জানিয়েছে।
জম্মু ও কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা বাতিলের পরপরই ওমরকে এ হরি নিবাসে নিয়ে আসা হয়। গ্রেপ্তারের পর থেকে এ কয়েক সপ্তাহে ওমরের দাড়িও বড় হয়েছে বলে সূত্রগুলো জানিয়েছে।ন্যাশনাল কনফারেন্সের এ নেতার সঙ্গে শনিবার বোন সাফিয়া ও বোনের ছেলে-মেয়েদেরকেও ২০ মিনিট দেখা করার অনুমতি দেওয়া হয়। এর আগে বৃহস্পতিবার মেহবুবার সঙ্গে তার মা ও বোনকে দেখা করার অনুমতি দেওয়া হয়েছিল বলেও জানিয়েছে সূত্রগুলো। চেশমাশাহিতে পর্যটন কর্তৃপক্ষের একটি স্থাপনাকে সাবজেল বানিয়ে এ পিডিপি নেতাকে সেখানে বন্দি রাখা হয়েছে। সহকারী কমিশনারের কার্যালয়ে বেশ কয়েকদফা ধর্না দেওয়ার পর গত সোমবার প্রথমবারের মতো সাফিয়া ও তার চাচিকে ওমর আব্দুল্লাহর সঙ্গে দেখা করতে দেওয়া হয়। গ্রেপ্তারের পর ওমরকে তার পরিবারের সঙ্গে প্রথম ফোনে কথা বলতে দেওয়া হয় ঈদের দিন, ১২ অগাস্ট।
ওমরের বাবা ফারুক আব্দুল্লাহকেও গৃহবন্দি করে রাখা হয়েছে। তিন বারের এ মুখুমন্ত্রীকে ফোন করতে বা ধরতেও অনুমতি দেওয়া হচ্ছে না বলে এনডিটিভি জানিয়েছে। জম্মু ও কাশ্মীর প্রশাসনের দুই জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা গত কয়েক সপ্তাহে ফারুকের সঙ্গে তিনদফা দেখা করেছেন, জানিয়েছে সূত্রগুলো। এ সময়ে তিনি ছেলের সঙ্গে দেখা করার ধারাবাহিক অনুমতি চেয়েও ব্যর্থ হয়েছেন।
মেহবুবা ও ওমর, দু’জনের কাউকেই টিভিতে সংবাদ দেখতে কিংবা সংবাদপত্রের খবর পড়তে দেওয়া হচ্ছে না বলে বিভিন্ন সূত্র জানিয়েছে। তবে চলচ্চিত্র দেখতে সাবেক দুই মুখ্যমন্ত্রীকে একটি করে ডিভিডি প্লেয়ার দেওয়া হয়েছে। ন্যাশনাল কনফারেন্সের ৪৯ বছর বয়সী নেতা তার কিন্ডল ট্যাবলেটে বই পড়তে এবং হরি নিবাস প্রাঙ্গনে হাঁটার সুযোগ পাচ্ছেন বলেও জানা গেছে। অগাস্টে জম্মু ও কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা বাতিলের পর থেকে উপত্যকাটি দেশের অন্যান্য অংশ ও বহির্বিশ্ব থেকে ‘কার্যত’ বিচ্ছিন্ন হয়ে আছে বলে জানিয়েছে আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম। ওই অঞ্চলের ওপর আরোপিত বিধিনিষেধ কর্তৃপক্ষ একে একে তুলে নেওয়া হচ্ছে বলে জানালেও আটক রাজনৈতিক নেতাদের কবে মুক্তি দেওয়া হবে, সে বিষয়ে কোনো ইঙ্গিত মেলেনি।
কাশ্মীরের গভর্নর সত্য পাল মালিক সম্প্রতি মেহবুবা ও ওমরের বন্দিদশা নিয়ে কৌতুক করে বলেছেন, আটকের এ ঘটনা মুক্তি পাওয়ার পর দুই রাজনীতিকের ভোট আরও বাড়িয়ে দেবে।