বাংলাদেশ বার্মার সাথে আলোচনায় রোহিঙ্গা শরণার্থীদের ফেরত পাঠানোর প্রক্রিয়া আবারও শুরু করার বিষয়ে অগ্রাধিকার দেবে।
বার্মার প্রেসিডেন্টের আসন্ন সফরকে সামনে রেখে দেশটির উপপররাষ্ট্র মন্ত্রী আগামীকাল শনিবার ৩০ শে জুন ২০১২ ঢাকায় আসছেন।
বাংলাদেশের পররাষ্ট্র সচিব মিজারুল জানান , কক্সবাজারের দুটি শিবিরে থাকা রোহিঙ্গা শরণার্থীর বাইরে অবৈধভাবে কয়েক লক্ষ বার্মার নাগরিক রয়েছে, তাদেরকেও ফেরত নেওয়ার বিষয়টি বার্মার কাছে উত্থাপন করা হবে।
এছাড়া যোগাযোগ ব্যবস্থাসহ দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যের ইস্যু নিয়ে বাংলাদেশ আলোচনা করবে।
বার্মার প্রেসিডেন্টের তিনদিনের এক সফরে বাংলাদেশে আসার কথা রয়েছে আগামী ১৫ই জুলাই।
দীর্ঘ সময় পর বার্মার উচ্চ পর্যায়ের এই সফরকে গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করছে বাংলাদেশ।
এর আগে বার্মার উপ পররাষ্ট্রমন্ত্রী ঢাকা সফরে এসে বাংলাদেশের পররাষ্ট্র সচিবের সাথে আনুষ্ঠানিক বৈঠক করবেন রোববার, যে বৈঠকে ঠিক করা হবে বার্মার প্রেসিডেন্টের সফরের আলোচনার এজেন্ডা।
কক্সবাজারের দু’টি শিবিরে ২৮ হাজারের বেশি যেসব রোহিঙ্গা শরণার্থী রয়েছে তাদের ফেরত নেবার প্রক্রিয়া আবার শুরু করার বিষয়টি বাংলাদেশ বার্মার সাথে আলোচনায় অগ্রাধিকার দেবে।
মিজারুল কায়েস, বাংলাদেশের পররাষ্ট্র সচিব
বাংলাদেশের পররাষ্ট্র সচিব মিজারুল কায়েস বলেছেন, ”কক্সবাজারের দু’টি শিবিরে ২৮ হাজারের বেশি যেসব রোহিঙ্গা শরণার্থী রয়েছে, যাদের ফেরত নেওয়ার প্রক্রিয়া বার্মা বন্ধ রেখেছে কয়েক বছর ধরে, তাদের ফেরত নেবার প্রক্রিয়া আবার শুরু করার বিষয়টি বাংলাদেশ বার্মার সাথে আলোচনায় অগ্রাধিকার দেবে।”
একইসাথে পররাষ্ট্র সচিব জানিয়েছেন, শিবিরের বাইরে তিন থেকে পাঁচ লাখের মতো বার্মার নাগরিক অবৈধভাবে বাংলাদেশে রয়েছে। তাদেরও বার্মা যাতে ফেরত নেয়, সে বিষয়টি নিয়েও বাংলাদেশ বার্মার কাছে অনুরোধ জানাবে।
সাম্প্রতিক সময়ে বার্মায় সাম্প্রদায়িক সহিংসতার প্রেক্ষাপটে আবারও রোহিঙ্গা শরণার্থীরা দফায় দফায় বাংলাদেশে অনুপ্রবেশের চেষ্টা করেছিল।
কিন্তু বাংলাদেশ সরকার শক্ত অবস্থান নিয়ে অনুপ্রবেশের ঐ সব চেষ্টা ব্যর্থ করে দিয়েছে।
এই পরিস্থিতি এবং তাতে বাংলাদেশের অবস্থানের বিষয়টিও বার্মার সাথে আলোচনায় তুলে ধরার কথা জানিয়েছেন পররাষ্ট্র সচিব মিজারুল কায়েস।
তিনি আরও উল্লেখ করেছেন, বার্মা এখন গণতন্ত্রের দিকে এগুচ্ছে এবং দেশটি সম্পর্কে উন্নত বিশ্বের ধারণা পাল্টাচ্ছে বলে বাংলাদেশ মনে করে। ফলে বাংলাদেশ বার্মার সাথে যোগাযোগ এবং বাণিজ্য বাড়ানোসহ সম্পর্ক উন্নয়নে জোর দেবে।
পররাষ্ট্র সচিব মিজারুল কায়েস বলেছেন, বাংলাদেশ এখন চীন, বার্মা এবং ভারতের মধ্যে সংযোগ বাড়াতে চায়। এই চারটি দেশের মধ্যে সংযোগ বাড়াতে যোগাযোগ ব্যবস্থার সম্প্রসারণ এবং সীমান্ত বাণিজ্য বাড়ানো ও জ্বালানি খাতে সহযোগিতার ব্যাপারেও বাংলাদেশ গুরুত্ব দেবে।
গত বছরই বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বার্মা সফর করেছেন।
সেই সফরেও রোহিঙ্গা শরণার্থী ইস্যুর পাশাপাশি যোগাযোগ এবং বাণিজ্য বাড়ানোর ব্যাপারে দুই দেশ বিভিন্ন প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল । তার অগ্রগতি নিয়েও এবার আলোচনা হবে বলে বাংলাদেশের পররাষ্ট্র সচিব জানিয়েছেন।
Leave a Reply